প্রথমেই বলে রাখি যে আমি টাইপিকাল বার্গার হেটার। এখন পর্যন্ত অনেক জায়গাতেই বার্গার খেয়েছি কিন্তু বার্গার নামক বস্তু খানা আমাকে সন্তুষ্ট করত...
প্রথমেই বলে রাখি যে আমি টাইপিকাল বার্গার হেটার। এখন পর্যন্ত অনেক জায়গাতেই বার্গার খেয়েছি কিন্তু বার্গার নামক বস্তু খানা আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনাই। হয় স্বাদ ভালনা নয়তো ওভাররেটেড আর দাম বেশী। ইদানিং গ্রুপে এই কেল্লাফতে নামক বার্গারের রিভিউ দেখে ভাবলাম একটু ঢু মেরে আসি। কেন যেন নাম টাই আমাকে চুম্বুকের মতন টান দিয়ে নিয়ে গেছে, নয়তো কেবল মাত্র এই বার্গার খাওয়ার জন্য মিরপুর ১২ থেকে ২ ঘন্টার বাস জার্নি করে যাওয়ার মানুষ আমি না। জিপিএস এর কল্যাণে খুজে পেতে একটুও কষ্ট হয়নাই।
আজিমপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে নেমে সোজা কেল্লার দিকে এগোতে থাকলেই লালবাগ মোড়ের আগেই রাস্তার হাতের ডান দিকে পরবে দোকান টা। ঢুকেই প্রথমে অর্ডার করলাম একটা চিকেন চিজ বার্গার ও চকোলেট কোল্ড কফি। ফফি টা আগেই চলে আসলো। চকোলেট এত বেশী ঘন করে দেয়া যে স্ট্র ঠিক মত নাড়ানো যায়না। মাত্র ৪৫ টাকায় এত মজার কোল্ড কফি সচরাচর পাওয়া মুশকিল। এক টানে ২ গ্লাস সাবার করে দিসি।এরপরে এল চিকেন চিজ বার্গার। মিডিয়াম সাইজের বার্গার। প্রথম দর্শনে খুব আহামরি কিছু মনে হয়নাই। সাধারণ বার্গারের মতই। তবে রুটি টা একদম ফ্রেশ। পেটি টাও যথেষ্ট জুসি আর স্বাদ ও খুব ভালো ছিল। মূল্য ১৩০ টাকা
খেতে খেতে উনাদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। উনারা যথেষ্ট আন্তরিক।
খেতে খেতে উনাদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। উনারা যথেষ্ট আন্তরিক।
খাওয়া শেষ করে ছোট নবাব ট্রাই করবো কিনা ভাবতেসি এমন সময় শুনলাম উনারা আজকে নতুন আরেকটা বার্গার চালু করেছে নাম বড় নবাব। আচ্ছা খাবই যখন বড় মিয়ারেই খাই। বললাম আপু আমার জন্য একটা বড় নবাব। এরপরে যাহা শুনিলাম তাহাতে গর্বে তো আর মাটিতে পা পরেনা। আমিই নাকি প্রথম পাবলিক যিনি এই নবাব কে খাইবে :p
চকচকে ফয়েল পেপারে ঢাকা বিশাল এক খানা বার্গার আনিয়া দিলো আমার সামনে। প্রথম দর্শনেই অবিভুত। ২ ধরনের পেটির সাথে চীজ ও ডিম পোঁচ করে দেয়া। সাথে করেক টুকরা মাশরুম ও ছিল। খাওয়ার সময় হাতের চাপে ডিমের কুসুম আর চীজ দিয়ে পুরো বার্গার মাখামাখি হয়ে স্বাদ আরও বেড়ে গেছে। কপাল ভালো উনারা স্টিলের ফয়েল পেপারে পেচিয়া সার্ভ করে, নয়তো এই নবাব সাহেব আমার নাক মুখ থেকে জামা কাপর পর্যন্ত মাখামাখি করে ফেলত। তবে এটা অনেকের কাছে বিরক্ত লাগতে পারে তাই বড় নবাব খেতে গেলে বলে দিয়েন যাতে কুসুম বেশী নরম না রাখে। তাহলে আর খেতে অসুবিধা হবেনা। বড় নবাবের মূল্য ২২০ টাকা। এটার কারনেই আজকে জার্নি টা সফল।
নেগেটিভ পার্টঃ প্রথমেই দোকানের অভ্যন্তরীণ জায়গা খুব বেশী ছোট। এতই ছোট যে আমার পিছনে বসে কয়েকজন আপুরা যতবার সেলফি নেয়ার ট্রাই করসে ততবারই আমার ভেটকি মারা মুখ টা উনাদের ক্যামেরায় চলে গেছে :p এমন কি উনারা যখন বলসে এই বেটা এমন ই ই ই করতেসে কেন এটাও আমার কানে আসছে :p ।আপুদের কে আমার রিভিউ তেই সরি বলে দিতেসি :'( না চাইতেও ফটো বম্বিং হয়ে গেসে :p
উনারা ৩ বোন কেবল মাত্র শখের বসে যে পুরান ঢাকা এলাকায় বার্গার এর দোকান তেমন নাই, :D
দেখি কেমন চলে এই ধারনায় শুরু করা। তাই ছোট হওয়া স্বাভাবিক। এমন কি কিছু সরঞ্জাম উপকরণ এর ও কমতি ছিল। যতটুকু পেরেছি উনাদের কে উপদেশ দেয়ার চেষ্টা করেছি। উনারাও তা হাসিমুখেই গ্রহণ করেছে। আমার রিভিউ দেখে কেও খেতে গেলে অনুরোধ করবো উনাদের ত্রুটি গুলো নিয়ে ক্রিটিসাইজ না করে উনাদের কে সহায়তা করার যাতে নিজেদের অসম্পূর্ণতা গুলো কাটিয়ে উঠতে পারে। উনাদের সাথে কথা বললেই বুঝা যায় যে উনারা প্রফেশনাল না। ঢুকেছিলাম কাস্টমার হয়ে কিন্তু যতক্ষণ ছিলাম নিজেকে উনাদের ফ্যামিলির মতন মনে হয়েছেউনারা ৩ বোন কেবল মাত্র শখের বসে যে পুরান ঢাকা এলাকায় বার্গার এর দোকান তেমন নাই, :D
বিদায় নেয়ার সময় অনুরোধ করে আসছি উনাদের ৩ বোনের একজন কে মিরপুরের বাসিন্দা হইতে :p তাহলে মিরপুর এর বাসিন্দা দের জন্য এই বার্গার আর কফি পেতে কিছুটা সুবিধা হবে :v
আর আরেকটা কথা। নতুন দোকান তাই মানুষ খাওয়ার জন্য হুমড়ি খাবেই আর সাথে গ্রুপে রিভিউ ফ্লাড ও হবে। তাই বলে একে সেই কুখ্যাত জাহান্নামের রাইস বোল আর রিজিকি আস্তা মুরগির সাথে তুলনা কইরেন না কেও।