সিলেট ভ্রমণ, সিলেটে ঘুরার জায়গা, সিলেট
ঢাকা থেকে দূরত্ব ২৪৪কি:মি: ভাড়া এসি ৮০০, নন এসি ৪২০ টাকা। ঢাকা থেকে
সিলেট এর উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায় গাবতলী এবং সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে৷
এর মাঝে শ্যামলী, হানিফ, সোহাগ ভলভো এবং ইউনিক পরিবহন উল্লেখযোগ্য৷ বাস
গুলো সকাল থেকে রাত ১২.৪৫ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময় পরপর ছেড়ে যায়৷
বাংলাদেশ রেলওয়ের ইন্টারসিটি ট্রেন আছে 8 টি৷ কালানি এক্সপ্রেস (বিকেল ৩ টা), পারাবত এক্সপ্রেস (সকাল ৬ টা ৪০ মি), উপবন এক্সপ্রেস (রাত ৯ টা ৫০ মি), জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস (দুপুর ১২ টা)৷ এর মধ্যে পারাবত মঙ্গলবার এবং উপবন বুধবার বন্ধ থাকে৷ অন্য দুইটি সপ্তাহে ৭ দিন ই চলে৷ এ ছাড়াও একটি মেইল ট্রেন আছে সুরমা মেইল নামের৷
ট্রেনে গেলে রাত ৯.৫০ এর উপবন এক্সপ্রেসে জাওয়াটাই সব থেকে ভালো কারন আপনার যেতে যেতে সকাল হয়ে যাবে আর আপনি যদি রাতে ট্রেনে ঘুমিয়ে নিন তাহলে সকালে ট্রেন থেকে নেমেই আপনার ভ্রমন শুরু করতে পারেন আর সময় লাগবে ৭-৮ ঘন্টা।ট্রেন এর টিকেট এর দাম: এসি বার্থ ৬৯৮ টাকা, এসি সিট ৪৬০ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস বার্থ ৪২৫ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস সিট ২৭০ টাকা. স্নিগ্ধা ৪৬০ টাকা, শোভন চেয়ার ১৮০ টাকা, শোভন ১৫০ টাকা, সুলভ ৯৫ টাকা৷
সিলেটে থাকার মত অনেকগুলো হোটেল আছে,সিলেটে আপনি আপনার প্রোয়োজন ও সামর্থ অনুযায়ী যে কোন ধরনের হোটেল পাবেন কয়েকটি পরিচিত হোটেল হল হোটেল হিল টাউন,গুলশান,দরগা গেইট,সুরমা,কায়কোবাদ ইত্যাদি। তবে ঈদের সময় সিট সংকট থাকতে পারে তাই যাওয়ার ২/৩ দিন আগে এডভান্স বুকিং দিলে ভালো হয়৷ লালা বাজার এলাকায় কম ভাড়ায় অনেক মানসম্মত রেস্ট হাউস আছে৷হোটেল অনুরাগ-এ সিঙ্গেল রুম ৪০০টাকা(দুই জন আরামসে থাকতে পারবেন), তিন বেডের রুম ৫০০টাকা(নরমালই ৪জন থাকতে পারবেন।
খাওয়ার জন্য সিলেটের জিন্দাবাজারে বেশ ভালো তিনটি খাওয়ার হোটেল আছে। হোটেল গুলো হচ্ছে পাঁচ ভাই,পানশি ও পালকি। এগুলোতে প্রায় ২৯ প্রকারের ভর্তা আছে।
ঘোরাঘুরি
শহরের ভিতরে ঘুরতে হলে আছে রিক্সা ও সিএনজি অটো-রিক্সা৷ আর শহরের বাইরে যেতে চাইলে আম্বরখানা ও মদিনা মার্কেট এলাকায় তুলনামূলক কম টাকায় মাইক্রোবাস বা কার পাওয়া যায়৷
সিলেট বেড়ানোর জন্য যেতে পারেনঃ
১.হজরত শাহ্জালাল রঃ এর মাজার 2. হজরত শাহ্পরান রঃ এর মাজার 3. সিলেট পর্যটন কর্পরেশন 4.মালনীছড়া চা বাগান, 5.শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়
শহরের বাইরে ঘোরার জায়গা গুলো হলো-
1.জাফলং. 2.মাধবকুন্ড (জলপ্রপাত)3. জাফলং 4. তামাবিল -5. জৈন্তাপুর 6. লালাখাল 7. শ্রীমঙ্গল 8. লাউয়াছেড়া রেইন ফরেস্ট 9. মাধবপুর লেক11. বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এর সমাধি 12 . ক্ষিতিশ বাবুর চিড়িয়াখানায়13 হামহামের14.শ্রীপুর (চা বাগান)15. ভোলাগঞ্জের16. রাতারগুল17. হাকালুকি18. টাঙ্গুয়া হাওড়19. বিছানাকান্দির
শহরের ভিতরে অল্প দূরত্বের মাঝে জায়গা গুলো হলো-
কানিশাইল - নৌকা ভ্রমণের জন্য, ঘন্টা প্রতি ৭০ টাকা৷
কিন ব্রিজ - ১৯৩৬ সালে ইংলিশ গভর্নর মাইকেল কিন এর নামে লোহা ও স্টিল দিয়ে সুরমা নদীর উপর তৈরী হয়৷ ব্রিজ এর একপাশে আছে সিলেট রেল স্টেশন৷ একে সিলেটের প্রবেশ দ্বার ও বলা হয়৷
আলী আমজাদ খান এর ক্লক টাওয়ার - টাওয়ার টি কিন ব্রিজ এর এক পাশে অবস্থিত৷ এখান থেকে একটু সামনেই সুরমা নদীর পার এ আছে সুন্দর বসার জায়গা আর চটপটি র দোকান৷
শাহ জালাল দরগাহ - হজরত শাহ জালাল (রাঃ) এর দরগাহ শরিফ কমপ্লেক্স এ আছে নামাজ আদায় এর মসজিদ আর অজুখানা৷ রাত এ কেউ যদি মাজারেই থাকতে চায় সে ব্যবস্থাও আসে৷ মহিলাদের নামজের জন্য আলাদা জায়গা আছে৷ মাজারে দেয়ার জন্য হালুয়া, মোমবাতি, আগরবাতি বা যে কোনো কিছু মাজার গেট এ পাওয়া যায়৷ জালালী কবুতর ও গজার মাছ কে খাবার দিতে হলে ১০ টাকা দিয়ে ধান এর প্যাকেট ও ছোট মাছও কেনা যায়৷
শাহ পরান (রাঃ) দরগাহ - হজরত শাহ জালাল (রাঃ) এর দরগাহ থেকে ৮ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত৷ শহর থেকে সিএনজি অটো-রিক্সা নিয়ে যেতে হবে৷ মাজার এর সামনের পুকুরে অজু করতে হবে৷ মেয়েদের নামাজের আলাদা জায়গা আছে৷ মাজার এ যাওয়ার সময় মনে কুচিন্তা থাকা যাবেনা এবং মাজার জিয়ারত করে নামার সময় পিঠ দেখিয়ে নামা যাবেনা এমন লোকজ বিশ্বাস প্রচলিত আছে৷
ইস্কন মন্দির - ইস্কন ভাবধারার অসাধারণ একটা জায়গা৷ অনেক ধরনের তৈজসপত্র, বিভিন্ন ইস্কন ভাবধারার মনীষীর বই ও মন্দিরের লোকেদের তৈরী প্যাকেটজাত খাবার পাওয়া যায়৷ রাত ৮ তার দিকে প্রার্থনা হয়৷ এখানকার মহারাজ এর তৈরী পলান্ন, সয়াবিন আর পায়েসের রান্না বিখ্যাত৷
চাসনি পীরের মাজার- মাজার এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো মাজারের পুরোটা জুড়েই আসে শতশত বানর৷ পীরের সাগরেদরা বানর এর রূপ ধরে আছে এমন কথা শোনা যায়৷ বানর কে খাওয়ানোর জন্য বুট ভাজা বিক্রি হয়৷
হাসন রাজা মিউজিয়াম - মরমী সাধক হাসন রাজার সিলেটের বাড়ি বলা হয় এটাকে৷ এখন মিউজিয়াম এর রূপ দেয়া হয়েছে৷ ভিতরে হাসন রাজা সম্পর্কে অনেক মজাদার তথ্য পাওয়া যাবে৷ টিকেট ৫ টাকা৷সিলেট নগরীর প্রানকেন্দ্র জিন্দাবাজারে গড়ে তোলা হয়েছে একটি যাদুঘর। এর নাম দেওয়া হয়েছে মিউজিয়াম অব রাজাস’।
টিলাগড় - সুন্দর ছায়াময় পরিবেশে আড্ডা দিতে বা হেটে বেড়াতে হলে যেতে হবে টিলাগড়৷ যাওয়ার পথে চোখে পর্বে সিলেট পলিটেকনিক, গবাদি পশু উন্নয়ন ফার্ম, ছোট বড় পাহাড় আর শেষ সীমানায় আচ্ছে গাস ফিল্ড৷ এখানে একটি ছোট চা বাগান ও আছে৷
এম সি কলেজ - টিলার উপরে বানানো বাংলাদেশের অন্যতম বড় এবং বিখ্যাত কলেজ৷ অনেক বিখ্যাত লোকজন এই কলেজে পড়াশোনা করেছেন৷ চাইলে তাদের তখনকার রুম গুলো ও দেখে আসতে পারেন৷
শাহ জালাল বিশ্ববিদ্যালয় - অন্যতম সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা বিশ্ববিদ্যালয়৷ এখানে গিয়ে চাইলে দেখা করতে পারেন ড: মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর সাথে৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রধান আকর্ষণ এর অসাধারণ শহীদ মিনার টি৷লয় দেশের সর্বোচচ শহীদ মিনার যা পাহাড়ের উপর অবস্থিত , দুনিয়ার সবচেয়ে লম্বা পথ-আল্পনা আর ক্যাম্পাস তো বোনাস ই আশা করি ভাল লাগবে
পর্যটন পার্ক -সিলেট পর্যটন কর্পরেশন সিলেট শহরেই অবস্থিত।রিক্সা অথবা সি.এন.জি নিয়েই এখানে যেতে পারেন।এখানে আপনি পাহারের উপরের টিলা থেকে সিলেট শহর দেখতে পারবেন। পর্যটন টিলা (এয়ারপোর্ট রোড, সড়কের পাশে অনেক চা বাগান দেখা যাবে),
মালনীচড়া-সিলেট মালনি চড়া চা বাগান দেখবেন এয়ারপোর্ট রোডের পর্যটন পার্ক দেখতে যাওয়ার পথে। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন চা বাগান মালনীচড়া ও লাক্কাতুড়া চা বাগান অপরূপ সাজে সজ্জিত যা আপনার চোখে ও মনে প্রশান্তি এনে দিবে । এটা সিলেট শহরের পাশেই রিকশাহ ও যেথে পারবেন । এখানে ইচ্ছে করলে পর্যটন মোটেল এ থাকতেও পারেন ।মালনীছড়া এবং লাক্ষাতুড়া চা বাগান দুইটিই সিলেট শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত। শহরের কেন্দ্রস্থল জিন্দাবাজার পয়েন্ট হতে গাড়ীতে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ।
রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ - প্রতিষ্ঠানের চার পাশ ঘিরেই আছে চা বাগান৷ একটু হেটে ভিতরে গেলেই আছে ভালো কিছু ফটোগ্রাফিক স্পট আর অল্প বসতি সম্পন্ন কিছু আদিবাসী গ্রাম৷
শহরের বাইরে ঘোরার জায়গা গুলো হলো-
মাধবকুন্ড - মাধবকুন্ড ঝরনার জন্য বিখ্যাত৷ তবে ঝরনা দেখতে চাইলে শীতকালে যেতে হবে৷বর্ষার সময়ে একটু বিপদজনক হয়ে যায় বন্যা আর জোক এর কারণে৷ অবশ্য শীতকালে ঝরনার পানি কমে যায় অনেক৷ মাধবকুন্ডের মাগুরছড়াতে পরিত্যক্ত গাস ও তেল খনি আছে৷ রাবার ও লেবুর বাগানও দেখতে পাওয়া যায়৷
কদমতলি বাস স্টেশন থেকে বাস এ করে যাবেন বারৈগ্রাম বা বড়লেখা নামক স্থানে .এর পর আপনি পাবেন টেম্প বা মেক্সি নিয়ে যাবে জল্প্রপাথ
জাফলং,তামাবিল,শ্রীপুর,জৈন্তাপুর একি দিকে থাকায় আপনি একদিনে সব গুলো ঘুরে দেখতে পারেন,কিন্তু সে জন্য আপনাকে একদম ভোরে রওনা দিতে হবে এবং একটু দ্রুত দব দেখতে হবে।আপনার হাতে যদি সময় থাকে তবে সব থেকে ভালো হয় এখানে দুইদিন সময় দিলে।প্রথম দিন জাফলং ও তামাবিল এবং পরের দিন শ্রীপুর ও জৈন্তাপুর এভাবে ভাগ করে নিলে আপনি ভালো করে জায়গা গুলো দেখতে পারবেন।
জাফলং – জাফলং সিলেট শহর থেকে ৬৬ কি.মি. দূরে অবস্থিত।বাস অথবা সি.এন.জি. অথবা মাইক্রোবাস ভাড়া করে এখানে যেতে পারেন।সি.এন.জি. অথবা মাইক্রোবাস ভাড়া করে নিয়ে গেলে আপনার যেমন যাতায়াত সুবিধা তেমনি আবার অসুবিধাও আছে।এক্ষেত্রে আপনি ঘুরার জন্য কম সময় পাবেন এবং ড্রাইভার আপনাকে যত কম দেখানোর চেষ্টা করবে।সি.এন.জি তে যে তে আসতে ভাড়া নিবে ১৪০০-১৬০০ টাকা আর মাইক্রোবাসে ২১০০-২৫০০ টাকা।আর যদি বাসে যেতে চান তাহলে সিলেটের সোবানিঘাট ও কদম তলা বাসা স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি জাফলং এর বাস পাবেন।বাস ভাড়া ৫০ টাকা।জাফলং এ বাস আপনাকে মামার বাজার নামক জায়গায় নামিয়ে দিবে সেখান থেকে মারি নদী অর্ধ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।আপনি রিক্সা অথবা পায়ে হেটেই সেখানে যেতে পারেন।নদীতে চোরা বালি থাকায় এখানে খুব সাবধানে থাকতে হবে।নরম বালি দেখলে সেখানে পা না দেয়াটাই ভালো।এখানে গেলে অনেক মাঝি নৌকা করে চা বাগান ও জিরো পয়েন্টে নিয়ে যাবার জন্য ডাকবে,কিন্তু আপনার হাতে সময় থাকলে এভাবে না ঘুরে আপনি পারাপারের নৌকায় করে নদী পাড় হয়ে ওপারে চলে যান।সেখানে কিছুদূর হাটলেই রিক্সা ও ভটভটি পাবেন ঘুরার জন্য।এখান থেকে চা বাগান,খাসীয়া রাজবাড়ি ও খাসিয়া পল্লি ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য ১০০-১২০ টাকায় রিক্সা পেয়ে যাবেন।খাসিয়া পল্লিতে ছবি উঠানো নিষেধ থাকলেও অনেকে ছবি উঠায় একারনে মাঝে মাঝে খাসিয়াদের সাথে ঝামেলাও হয়।তাই ছবি না উঠানোই ভালো।
জাফলংয়ে শীত ও বর্ষা মওসুমের সৌন্দর্যের রুপ ভিন্ন। বর্ষায় জাফলং এর রুপ লাবণ্য যেন ভিন্ন মাত্রায় ফুটে উঠে। সচ্ছ পানিতে তাকালেই দেখা যাবে পাথর গড়াতে গড়াতে আসছে৷ ট্রলার নিয়ে একটু ভিতরের দিকে গেলে পাওয়া যাবে আরেকটা বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার৷ একই সাথে বি ডি আর এবং বি এস এফ প্রহরীরা যেভাবে ঘুরাফেরা করে তাতে হয়ত মনে হতে পারে দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে কোনো উত্তেজনা বিরাজ করছেনা৷জাফলং এ আপনি দেখবেন চা বাগান ,খাসিয়া পুঞ্জি ও খাসিয়া রাজ বাড়ি এবং বল্লা ঘাট এ পাথর তুলার দৃশ্য পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়। সীমান্তের ওপারে ইনডিয়ান পাহাড় টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম ধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রীজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেল পানি,উঁচু পাহাড়ে গহিন অরণ্য ও শুনশান নিরবতার কারণে এলাকাটি পর্যটকদের দারুণভাবে মোহাবিষ্ট করে। আর জাফলং গেলে সাথে এক জোড়া শুকনো কাপড় ও নিয়ে যেতে হবে কারণ ওখানকার শীতল পানিতে একটু গোসল করার ইচ্ছা দমিয়ে রাখা কষ্ট৷। এখানে আপনি কিছু পাথর এর সামগ্রী কেনাকাটা করতে পারেন ,দামাদামি করে কিনলে জিতবেন ।
জাফলং
সিলেট থেকে আপনি বাস/ মাইক্রোবাস/ সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় যেতে পারেন জাফলং এ। সময় লাগবে ১ ঘন্টা হতে ১.৩০ ঘন্টা।
ভাড়া : বাস -জনপ্রতি ৬৫ টাকা, মাইক্রোবাস- ১৭০০-২০০০/-টাকা এবংসিএনজি অটো রিক্সা: ৭০০/ টাকা।
থাকার তেমন বেশি সুব্যবস্থা জাফলং এ নাই। তবে যে কয়টি ব্যবস্থা আছে তার মধ্যে জেলা পরিষদের নলজুরী রেস্ট হাউস(থাকতে হলে পূর্বে অনুমতি নিতে হবে), শ্রীপুর পিকনিক স্পট উল্লেখযোগ্য। কিছু বোডিং এর ব্যবস্থা আছে। এছাড়া শ্রীপুর ফরেস্টে এর একটি বাংলো আছে পর্যটকদের থাকার জন্য। জাফলং “মামার দোকান”পর্যটন হোটেল”। ডাবল বেড ভাড়া ৩৫০ টাকা।
এসব ঘুরে নদী পারে চলে এসে কিছু সময় ঘুরে কাটিয়ে আবার মামার বাজারে ফেরে এসে বাসে উঠতে হবে।এখান থেকে তামাবিলের দূরুত্ব ৫ কিলোমিটার।
তামাবিল - বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার যেখানে "বাংলাদেশ ০ কি: মি:" লেখা মাইলফলক আছে৷ মাইলফলক এর পাশে দাড়িয়ে দুই দেশের মাটিতে পা দিয়ে ছবি তোলার অনন্য সুযোগ থাকবে৷ এখানে কিচু চা বাগান ও আছে৷তামাবিলে দেখার মত তেমন কিছু নেই এখন আর,কয়লা আর পাথরের ব্যাবসার জন্য এর সব সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়ে এপাড়ে বাংলাদেশ আর পাশেই ভারতের মেঘালয়।ছোট পাহাড়ি রাস্তার পাশ ঘেসেই দানবের মত মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে মেঘালয় পর্বতমালা।এছাড়া এখানে দেখার মত আর কিছু নেই।দূরের আবছা মেঘালয় পাহাড় দেখতে দেখতে বড় কোন পাহাড়ে উঠতে ইচ্ছে করতে পারে কিন্তু তখনই খেয়াল করবেন পাশাপাশি দুটো দেশ হলেও মেঘালয়ের একটি বড় পাহাড়ও বাংলাদেশের ভাগে পড়েনি সব ভারতের।তখন কিছুটা খারাপই লাগবে
জৈন্তাপুর গৌর গোবিন্দ রাজ প্রাসাদ - জাফলং থেকে ফিরার পথে যাবেন জৈন্তাপুর বাজার এ জায়গায় পাবেন, জৈন্তা রানীর বাড়ি আর দিঘি .১৮শ শতকের জৈন্তা রাজ বংশের রাজাদের বাসভবন ছিল এই প্রাসাদ৷ জৈন্তাপুর ছিল তখন রাজধানী৷ অল্প কিছু নিদর্শন এখনো আসে
টকফল গবেষণা কেন্দ্র জৈন্তা বাজার থেকে আপনি হেটে গেলে ১০ মিনিট লাগবে।
লালাখাল - জৈন্তাপুর দেখা শেষ করে আসার সময় রাস্তায় পাবেন লালাখাল নামক স্থান। স্বচ্চ নীল জল রাশি আর দুধারের অপরুপ সোন্দর্য, দীর্ঘ নৌ পথ ভ্রমনের সাধ যেকোন পর্যটকের কাছে এক দূর্লভ আর্কষণ। তেমনি এক নির্জন মনকাড়া স্থান লালাখাল। বাংলাদেশের সবোর্চ্চ বৃষ্ঠিপাতের স্থান এবং রাতের সৌন্দর্যে ভরপুর এই লালাখাল সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার সন্নিকটে অবস্থিত। লালাখাল নদীর ব্রীজ এর নিচ এ গিয়ে দেখতে পাবেন নিল রঙের পানি ,ব্রীজ এর বামপাশে আছে নৌকা ঘাট ,এখানে আপনি পাবেন স্পীড বুট ও ছুটো নৌকা এগুলু দিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন লালাখাল যাবার পথে আপনির দুচোখ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে যাবেন কিন্ত সৌন্দর্য শেষ হবে না। ৪৫ মিনিট যাত্রা শেষে আপনি পৌছে যাবেন লালখাল চা বাগানের ফ্যাক্টরী ঘাটে। কি সুন্দর নীল, একদম নীচে দেখা যায়। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। সিলেট শহর হতে লালাখাল যাবার জন্য আপনাকে পাড়ি দিতে হবে ৩৫ কি.মি রাস্তা।লাখালের পথে ভারতীয় বর্ডারের জিরো পয়েন্ট, লালাখাল টি গার্ডেন।
সিলেট শহর হতে লালাখাল যাবার জন্য আপনাকে পাড়ি দিতে হবে ৩৫ কি.মি রাস্তা। আপনি অনেক ভাবে লালাখাল যেতে পারেন। বাস, মাইক্রো, টেম্পু যোগে আপনি যেতে পারেন। লালাখালে থাকার তেমন কোন সুবিধা নাই। সাধারনত পর্যটকরা সিলেট শহর হতে এসে আবার সিলেট শহরে হোটেলে রাত কাটায়।
বিছানাকান্দি আর পান্থুমাই-সারিঘাঁটের এক পাশে লালাখাল। তার উল্টো পাশের রাস্তা চলে গেছে গোয়াইনঘাঁটের দিকে। সেই রাস্তা হতে জনপ্রতি ১৬-২০টাকা ভাড়ায় টেম্পু করে গোয়াইনঘাঁট যাওয়া যায়। সেখান থেকে অটোরিকশা করে যেতে হবে বিছানাকান্দি।বিছানাকান্দির জন্য অটোরিকশা ভাড়া ৩০০-৪০০ টাকার বেশী নয়।থটা প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের উপরে এবং সোয়া এক ঘণ্টা হাটতে হল।বিছানাকান্দি দেখার পর আপনার আর জাফলং ভালো লাগবে না।বেশি স্রোতের সময় বিছানাকান্দিতে সাবধানে নামুন।
সিলেট এসে জাফলংগামী বাসে চড়ে বসুন, নেমে পড়ুন সারীঘাট। সেখান হতে টেম্পু করে গোয়াইনঘাট হয়ে বিছানাকান্দি। আপনি সারীঘাট হতে সরাসরি অটোরিকশা করেও চলে আসতে পারেন। সবচেয়ে ভালো সিলেট থেকে অটোরিকশা করে চলে আসা। দরদাম করতে পারলে ৫০০ টাকা ভাড়ায় আপনি সিলেট হতে বিছানাকান্দি চলে আসতে পারবেন।
মহা লক্ষী মন্দির – সিলেট শহর থেকে দক্ষিনে জৈনপুর এ আছে এই শক্তি পিঠ৷ এখানে একটি ভৈরব মন্দির আছে৷
শ্রীমঙ্গল – বাংলাদেশের চা শিল্পের রাজধানী দুটি পাতা একটি কুড়ির শ্রীমঙ্গল৷ কার্পেটের মত সাজানো চা বাগান সবদিকে৷ এখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চা বাগান সহ বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট ও অনেক গুলো প্রসেসিং প্লান্ট আছে৷ চা পাতা থেকে চা প্যাকেটজাত করা পর্যন্ত পুরোটুকু দেখতে চাইলে ফ্যাক্টরী ঘুরে দেখা যায়৷ শ্রীমঙ্গলের নিলকন্ঠ কেবিন এর সাত রঙের রংধনু চা (৭০ টাকা) ও বিখ্যাত৷ লেবু ও কমলার বাগানও আছে৷
লাউয়াছেড়া রেইন ফরেস্ট - শ্রীমঙ্গল থেকে আপনি রিক্সায় বা গাড়িতে যেতে পাবেন .বাংলাদেশের অন্যতম সংরক্ষিত বন৷ ঘন জঙ্গলের ফাকে প্রচুর বানর এবং পাখি দেখতে পাওয়া যায়৷ বনে বাঘ, অজগর, হরিন দেখতে পাওয়া যায় বলে শোনা যায়৷ টিলার উপরে কিছু রেস্টুরেন্ট আছে৷ এশিয়ার এক মাত্র ক্লোরোফর্ম গাছ এখানেই আছে যার বাকল এর গন্ধ নিলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে৷ ৫০ টাকা দিয়ে হাতির পিঠে ওঠার সুযোগ আছে৷
মাধবপুর লেক - শ্রীমঙ্গল এর কমলগঞ্জ এ আছে এই লেক৷ সবসময় শতশত পদ্ম আর শাপলা ফুটে থাকে৷ এখানে একটা পার্ক আর পিকনিক স্পট আছে৷ পাশের টিলার উপর থেকে শ্রীমঙ্গল এর চা বাগান এর বিস্তৃতিটা ভালো মত বোঝা যায়৷ এখানকার মনিপুরি পাড়াতে ঘুরে আসা যায়৷ তাদের শিল্পকলার সাথেও পরিচিত হওয়া যায়৷ চা পাতা দিয়ে তৈরী আলাদা আর মজাদার বিভিন খাবার পাওয়া যায়৷মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার কাঁঠালতলী থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত মাধবকুন্ড।
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এর সমাধি - মাধবপুর লেক থেকে বর্ডার এর দিকে গেলে বি ডি আর চেক পোস্ট আছে৷ ওখানে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এর সমাধি আছে৷ সীমানা জটিলতায় ভারতের অংশে তার কবর টা পড়ে গেলে আবার সেখান থেকে এনে এই চেকপোস্ট এর এখানে সৌধ তৈরী করা হয়৷ একটু সামনে গেলেই দেখা যাবে চা গাছ এর চারা তৈরী হচ্ছে আর ছোট একটা খাল দিয়ে ভাগ করা বাংলাদেশ- ভারত সীমান্ত৷
ক্ষিতিশ বাবুর চিড়িয়াখানায় (ওদিকে গেলে কেউ চিড়িয়া খানা মিস করবেন না)।
হামহামের দিকে রওয়ানা দিতে হলে ৬ টার মধ্যে বের হতে হয় শ্রীমঙ্গল থেকে সিএনজি করে গেলাম ভানুগাছি । অইখান থেকে হামহামের জন্য মাইক্রো ভাড়া করতে হবে। পুরোরাস্তা গাড়িতে করে যাওয়া যায় না । গাড়ি চলে চাম্পারানির চা বাগান (ন্যাশনাল টি এর কারখানা পর্যন্ত)।তারপর গাইড নিয়ে হাঁটতে হয় পাহাড়ি রাস্তায় পায়ে আড়াই ঘন্টার মত । চলার পথে পড়বে প্রায় চারটা বাঁশের সাঁকো।
ক্ষিতিশ বাবুর চিড়িয়াখানায় (ওদিকে গেলে কেউ চিড়িয়া খানা মিস করবেন না)।
ভোলাগঞ্জের- সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জের দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলো মিটার। শহর থেকে ভোলাগঞ্জ পর্যন্ত সরাসরি কোন যানবাহন সার্ভিস নেই। আগন্তুকরা সিলেট থেকে টুকেরবাজার পর্যন্ত যাত্রীবাহি বাস অথবা ফোরস্ট্রোকযোগে যাতায়াত করেন। টুকের বাজার থেকে ভোলাগঞ্জ পর্যন্ত রয়েছে বেবিটেক্সি সার্ভিস।
ভারতের আসাম প্রদেশের রাজধানী শিলংয়ে এক সময় লোকজন এ রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতো। কালের পরিক্রমায় এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রজ্জুপথ। নাম ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে। দেশের সর্ববৃহৎ ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারীর অবস্থানও এ এলাকায়। রোপওয়ে, পাথর কোয়ারী আর পাহাড়ী মনোলোভা দৃশ্য অবলোকনের জন্য এখানে প্রতিদিনই আগমন ঘটে পর্যটকদের।
রাতারগুল-রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টটি ‘সিলেটের সুন্দরবন’ নামে খ্যাত। কেননা, ম্যানগ্রোভ বনের সাথে বেশ মিল আছে এ বনের। যদিও সমুদ্রের ধারে কাছে এটা অবস্থিত নয়, তবুও মিঠাপানির সংস্পর্শে বেঁচে থাকতে এ বনের গাছগুলো নিজেদের এডাপ্টেড করে নিয়েছে। এই বন বছরের ৫-৬ মাস সম্পুর্ণ পানির নিচে থাকে। বাকি ক’মাস পানিবিহীন থাকে। এজন্য এই বন ভ্রমনের ক্ষেত্রে সময়টা একটা বড় ফ্যাক্টর।
রাতারগুল যাওয়া যায় বেশ কয়েকটি পথে।সিলেট শহর থেকে প্রায় ২০ কিমি দূরে অবস্থিত সিলেট-জাফলংয়ের গাড়িতে উঠে নেমে যাবেন সারিঘাট। এখান থেকে টেম্পোতে করে গয়াইনঘাট বাজার। বাজারের পাশেই নৌঘাট। এখান থেকে রাতারগুল যাওয়া-আসার জন্য নৌকা রিজার্ভ করতে হবে। তবে মনে রাখবেন, এই নৌকায় করে কিন্তু রাতারগুল বনের ভেতরে ঢোকা যাবে না। বনে ঢুকতে হবে ডিঙি নৌকায় চেপে। আবার সিলেটের আম্বরখানা মোড় থেকেও সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে চলে যেতে পারেন মোটরঘাট / শ্রীঙ্গী ব্রিজ। যেতে সময় লাগবে ৩০ মিনিট, ৪ জন রিজার্ভ ভাড়া পড়বে ৬০০/৭০০ টাকা। সেখানকার নৌঘাট থেকে নৌকা রিজার্ভ করে রাতারগুল যেতে পারবেন, ২/৩ ঘন্টার জন্য ভাড়া পড়বে ৩০০/৪০০ টাকা।বনে ঢোকার আগে অবশ্যই রাতারগুল বন বিট অফিস থেকে অনুমতি নিতে হবে।
সর্তকতাঃ
বর্ষায় রাতারগুল দেখতে সুন্দর। কিন্তু এ সময় জোঁক আর সাপের প্রকোপ বেশি। তাই সতর্ক থাকতে হবে। যাঁরা সাঁতার জানেন না, সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখতে পারেন। বনে ঢুকে পানিতে হাত না দেওয়াই ভালো।কারন বিষাক্ত সব সাঁপ এখানে আপন মনে ঘুরে বেড়ায়!
হাকালুকি হাওর, মৌলভীবাজার : হাকালুকি হাওর মৌলভীবাজার এবং সিলেট জেলার ৫ টি উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত। ২৩৮ টি বিল এবং নদী মিলে তৈরী হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার একরের এ হাওড়। বর্ষাকালে একে হাওর না বলে সমূদ্র বলা যায় অনায়াসে। জীব বৈচিত্রে ভরপুর এ হাওড় এ নানান প্রজাতির মাছ রয়েছে। বর্ষায় থৈ থৈ পানিতে নিমগ্ন হাওরের জেগে থাকা উঁচু কান্দাগুলোতে আশ্রয় নেয় পরিযায়ী পাখিরা —রোদ পোহায়, জিরিয়ে নেয়। সময় ও সুযোগ পেলে ঘুরে আসুন হাকালুকি।
হাকালুকি- যাবার সবচে ভালো উপায় হলো রাত ৯.৫০ এ সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া উপবন এক্সপ্রেস ওঠে যাওয়া। নামতে হবে মাইজগাও ষ্টেশন এ। এটি সিলেটের ঠিক আগের ষ্টেশনটি। মাইজগাও থেকে দুটি উপায়ে যাওয়া যায়
- ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার হয়ে : মাইজগাও নামার পর গাছ পালা ঘেরা একটা রাস্তা ধরে প্রায় ১ কি:মি: হাটলেই পৌছে যাবেন ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার। সকালবেলা হাটতে ভালোই লাগবে। আবার একটু অপেক্ষা করলে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা পাবেন। তাতে করে ১০ মিনিটে ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার।
বাজারে নেমেই আল মুমিন রেষ্টুরেন্ট এ বসে যাবেন। এর ২ এবং ৩ তলায় সুন্দর দুটি টয়লেট রয়েছে। হাতমুখ ধুয়ে নাস্তা করে সামনের নৌকাঘাটে চলে আসুন। এখান থেকে নৌকা দরদাম করে উঠে পড়ুন সারাদিনের জন্য। বড় গ্রুপ হলে (১০/১৫ জন) বড় ছই ওয়ালা ট্রলার দিন। দিনপ্রতি ভাড়া নিতে পারে ৩-৪ হাজার টাকা (অবশ্যই দামাদামি করবেন)। কিছু খাবার এবং পানি কিনে নিন কারন হাওড় ও কোন দোকানপাঠ পাবেন না। এবার নৌকায় উঠে কুশিয়ারা নদী পাড়ি দিয়ে হাওড়ে ঘুরে বেড়ান। কুশিয়ারা পারি দেত প্রায় ৪০ মিনিট লাগবে।
গিলাছড়া বাজার হয়ে : কুশিয়ারা নদীর ৪০ মিনিট সেভ করতে মাইজগাও থেকে সরাসারি ব্যাটারী রিক্সা নিয়ে চলে আসতে পারেন গিলাছড়া বাজারে। এখান থেকেই হাওড় শুরু। তবে সমস্যা হলো এখানে বড় বোট পাওয়া যায়না। বোট আনতে হবে সেই ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার থেকেই। এখানকার লোকজন খুব অতিথিপরায়ন। তারা আপনাকে নিজেদের বাসায়ে নিয়ে যাবে এবং টয়লেট ইউজ করতে দেবে।
কোথায় ঘুরবেন : পুরো হাওড়ই দেখার মতো। সমূদ্রের মতো বিশাল ঢেউ, চারদিকে পানি আর পানি। অনেক দুরে দুরে গ্রাম। চলে যেতে পারেন এমনি কোন গ্রামে। সারা দুপুর কাটিয়ে বিকেলে ফিরে আসতে পারেন।
গ্রাম ইসলাম পুর। ইসলামপুর গ্রামটি হাওড়ের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ গ্রাম। এখানে যেতে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে প্রায় ২ ঘন্টা লাগবে। গ্রামে নেমে কোন একটি বাড়িতে গিয়ে রান্না করার অনুরোধ করতে পারেন। তারা করে দেবেন। রাতে থাকতে চাইলে তাদের বাড়িতে থাকতে পারেন। এছাড়া ইসলামপুর সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয় নামে একটি স্কুল আছে। থাকতে পারেন তার মেঝেতেও। আর নৌকার ছাদে থাকলেতো কথাই নেই।
কিছু প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর :
- লিটন : ০১৭১-০৯৯৪০৯৯ ছেলেটি সিলেট অঞ্চলে গাইডের কাজ করে। ওকে আগে বলে রাখলে বোট ঠিক করে রাখবে। খরচ আর কিছু টাকা দিলেই হবে। প্রয়োজনে পুরো ট্যুর এ সময় দেবে লিটন।
- জালাল উদ্দীন স্যার : ০১৭২-৪০১১১২৫ উনি ইসলামপুর স্কুলের হেড মাষ্টার। ওনাকে ফোন দিলে যে কোন তথ্য বা সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন।
সতর্কতা : হাওড় ট্রিপ এ অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট সাথে নেবেন।
টাঙ্গুয়া হাওড়,সুনামগঞ্জ : টাঙ্গুয়া হাওড়ের প্রতি ট্রাভেলারদের ইদানিং আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।কিন্তু সঠিক তথ্যের অভাবে এ ভ্রমণ অনেক বিরম্বনা. বলে রাখা ভালো টাঙ্গুয়া গেলে ১০-১৫ জনের গ্রুপে গেলে খরচ কমে আসে।
টাঙ্গুয়া যেতে হলে সবার আগে খুব সকালে সুনামগগঞ্জ নেমে বৈঠাখালি ঘাট যেতে হবে। বৈঠাখালি যাবার জন্য টেম্পু বা ব্যটারী চালিত অটো পাবেন।অটোতে উঠে যান ৫ জন করে।জনপ্রতি নেবে ১০ টাকা করে। বৈঠাখালি ঘাটে নেমে ৩ টাকা দিয়ে নদীর ওপার যাবেন।ওপার গেলে অনেক মোটরসাইকেল পাবেন।জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে তাহিরপুর চলে যান।একটা কথা গ্রুপ বড় হলে আগে থেকে কাউকে ফোন করে লেগুনা নিয়ে আসতে বলুন।১২ জন বসতে পারবেন।ভাড়া নেবে ১২০০ টাকা।রাস্তা খুব ভালো।৩৫ কি:মি: দুরের তাহিরপুর যেতে সময় লাগবে প্রায় দেড় ঘন্টা।
তাহিরপুর নেমে নাস্তা করে নিন এবং খাবার মতো শুকনো খাবার ও পানি নিয়ে নিন।এরপর একটা নৌকা ভাড়া নিন সারাদিনের জন্য। ভাড়া পরবে ৩-৬ হাজার টাকা (সাইজ অনুযায়ী)। এরপর সারাদিন হাওড়ে ঘুরুন,গোছল করুন, বাগনি বর্ডার এবং বারিক্কা টিলা যান এবং ফিরে আসুন।এছাড়া যেতে পারেন টেকেরঘাট পরিত্যাক্ত চুনাপাথর প্রকল্পে।সবচে ভালো হয় হাওড়ে কোথাও রাত কাটান।
আমি একজনের মোবাইল নম্বর দিলাম।বেলাল নামের ছেলেটি খুব ভালো।ওকে আগে বলে রাখলে ও টাকা পাঠালে ও :
- বৈঠাখালি ঘাটে লেগুনা নিয়ে এসে আপনাদের নিয়ে যাবে।
- একটা নৌকা ঠিক করে রাথবে এবং সারাদিন আপনাদের সাথে থাকবে
- হাওড়ের মাঝে ওর বাড়িতে দুপুর/রাতের রান্নার ব্যবস্থা করবে
- রাতে ওর বাড়ির পাশে হাওড়ে নৌকায় ঘুমাবার ব্যবস্থা করবে।
সব খরচ দেবার পর ওকে কিছু টাকা বকশিশ দিলেই ও খুশী থাকবে।বেলালের ফোন নম্বর হলো : ০১৭২৩০৯১৩৫২
এবার দক্ষিন এশিয়ার সবচেয়ে বড়গ্রাম বানিয়াচং দেখতে .এখানে আপনি যেথে হলে হবিগঞ্জ থেকে ৩০ মিনিট বাস ও মাক্সি দিয়ে যেতে হবে বানিয়াচং এ .বানিয়াচং বাস থেকে নেমে রিকশাহ করে এ জায়গা গুলু দেখবেন সাগর দিঘি ,কমলা রানীর দিঘি ও বানিয়াচং জমিদার বাড়ি (রূপ রাজকার পারা)সবগুলা জায়গা আপনি রিকশাহ দিয়ে দেকতে পারবেন কারণ এ এলাকায় সব লোকাল রিকশাহ ড্রাইবার .সবাই এ জায়গা গুলু চিনে .
চুনারু ঘাট এ সত্চরী উদ্যান এ গবির এ উদ্যান যেন সবুজের সমারূহ .হবিগঞ্জ তেকে মেক্সি অব বাস এ যেথে পারবেন এ জায়গায় .তারপর শেষ করতে পারেন আপনার গ্রেটার সিলেট ভ্রমন
# জাফলং দেখার আগে মাধবকুন্ড দেখা উচিত বলে আমি মনে করি। জাফলং দেখবেন লাষ্টের দিন, যখন ফিরবেন তখন যেন চোখে জাফলং ভেসে থাকে। পাশে থাকা মনের মানুষটা কেও যেন ভুলে যান !!! শুধুই জাফলং হাঃহাঃহাঃ...
# লোকাল লোকজন অতিথিপরায়ন কিন্তু তাদের সাথে তর্কাতর্কি তে না যাওয়াই ভাল।
# টুরে অযথা বীরত্ব না দেখানোই উচিত, হয়তো কিছুই হবে না কিন্তু যে দেশের সীমান্তরক্ষীরা ফেলানীকে মেরে কাটা তারে ঝুলিয়ে রাখে তাদের "কিছু করবে না" এই বিশ্বাস আমি করতে রাজি না।
# উগ্র ড্রেস পরা উচিত না সিলেটে, মনে রাখবেন আপনি যাচ্ছেন "বার আওলিয়ার মাজারের শহরে"। ভদ্রতা বজায় রাখুন।
# জাফলং যান আর মাধবকুন্ড যান, যেখানেই যান, পানিতে আপনে নামবেনই, তাই কাপড় চোপড় সাথে রাখবেন। ভাড়াও পাবেন তবে নিজেরটাই ব্যবহার করা উচিত।
# মাজারে যাবেন কিন্তু লক্ষ রাখবেন আপনার সব ভক্তি যেন আল্লাহর প্রতিই থাকে। সব আল্লাহর ইচ্ছায় হয়, মাজারে গিয়ে মাথা ঠেকাবেন না।
# পাঠিকাদের বলছি, ভুলেও মেকআপ নিয়েন না, অনেক গরম পরিবেশ, একটুপর আপনাকে ভুতের মত লাগবে। হাঃহাঃহাঃ
# টুরে যাবেন তো হালকা ড্রেস পরার চেষ্টা করুন। ভারি ড্রেসে আপনি সহজে মুভ করতে পারবেন না।
# অনুমতি না নেওয়া থাকলে চা-বাগানের বেশি ভিতরে ঢুকা উচিত না।
# কোন ছাইয়া পাবলিকদের দলে ভিরাবেন না, মনে রাখবেন, একজন স্বার্থপর টুর মেম্বার আপনার স্বাধের টুরের ১২টা বাজায় ফেলতে পারে।