মানুষকে কেন্দ্র করেই মার্কেটিং ক্যাম্পেইন আর ক্যাম্পেইনের সফলতার চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে মানুষের বিহেভিয়ারের মাঝে। থিউরিটিক্যালি বলা হয় একজন মান...
মানুষকে কেন্দ্র করেই মার্কেটিং ক্যাম্পেইন আর ক্যাম্পেইনের সফলতার চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে মানুষের বিহেভিয়ারের মাঝে। থিউরিটিক্যালি বলা হয় একজন মানুষের আবেগ, মনোভাব এবং অবজেক্ট ইউটিলিটির সমন্বয় ঘটানোর মাধ্যমে ক্যাম্পেইনকে সাফল্যের চুড়ায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
মানুষকে ভালভাবে বুঝার জন্য বছরের পর বছর দীর্ঘ একটা সময় ধরে অনেকটা সময় ধরে তার চিন্তাভাবনা, চিন্তাভাবনার প্যাটার্ন, চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে এমন ফ্যাক্টর এবং আচরণ স্টাডি করা হয়, এক্সপ্লেইন করা হয়। এইসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন মডেল এবং থিউরি সামনে নিয়ে আসেন। যেগুলোর মধ্য দিয়ে মানুষের আচরণ এক্সপ্লেইন করা যায়।
মানুষের আচরণ স্টাডি এবং এক্সপ্লেইন করার সবচেয়ে বেস্ট মিডিয়াম হচ্ছে সাইন্টেফিক ইন্সাইট। এই ইন্সাইটের উপর বেজ করে একজন মার্কেটার তার প্রয়োজন আনুযায়ী তার ক্যাম্পেইন রিফাইন করতে পারেন আবার ইন্সাইট এন্যালাইসিস করে তিনি তার প্রয়োজন অনুযায়ী Consumer behaviour theory বেছে নিতে পারেন।
এখন হয়ত প্রশ্ন উঠতে পারে Consumer behaviour theory কি? বিষয়টি হচ্ছে সংক্ষেপ করে বললে কঞ্জিউমার বেহিভিয়ার থিউরি সেইসমস্ত ফ্যাক্টরকে এড্রেস করে যেগুলো একজন ব্যক্তির সামগ্রিক পারচেজিং ডিসিশনকে প্রভাবিত করে।
1. THEORY OF REASONED ACTION
Martin Fishbein and Icek Ajzen Reasoned Action থিউরির ধারনা সামনে নিয়ে আসেন। তারা তাদের থিউরিতে বলেন “ A person’s behaviour is determined by their intention to perform the behaviour and that this intention is, in turn, a function of their attitude toward the behaviour and subjective norms (Fishbein & Ajzen, 1975).”
এই থিউরির ২টি বেসিক এজাম্পশন হচ্ছে; ব্যক্তি সবসময় যৌক্তিকভাবে আচরণ করে এবং তার চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইনফরমেশন সে ব্যবহার করে।
Intention / অভিপ্রায় এবং আচরণের মাঝে ঠিক কোন জায়গায় কি ধরনের পার্থক্য আছে এই বিষয়টি পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়েছে এই থিউরির মাধ্যমে। ব্যক্তির আচরণ কেমন হবে তা নির্ভর করে আচরণটি করার ব্যক্তির অভিপ্রায়ের উপর। অধিকাংশ ব্যক্তি তাদের আচরণের অভিপ্রায় আচরণ করার অনেক পুর্বেই ঠিক করে এবং এই অভিপ্রায় ঠিক করে দেয় ব্যক্তি আচরণটি করবে কি করবে না।
“ The bigger the intention, the more likely the behaviour will happen.”
Intention হচ্ছে Attitude towards behaviour এবং Subjective norms এর সন্মিলিত রূপ।
Attitude, আচরণ সম্পর্কে ব্যক্তির ইতিবাচক বা নেতিবাচক চিন্তাভাবনাকে নির্দেশ করে এবং ২টি ফ্যাক্টর ফলাফল বা পরিণতির দিকে ব্যক্তির Attitudeকে প্রভাবিত করে সেগুলো হচ্ছে;
প্রথমে ব্যক্তি তার আচরণের ফলাফল বা পরিণতির কথা চিন্তা করে। এরজন্য সে আত্নজিজ্ঞাসা করতে পারে ; নিজের কাছে নিজেই জানতে চায় এটা করলে কি হবে?
এবং দ্বিতীয়ত; ব্যক্তি পরিণতি বা ফলাফলের প্রভাব নিয়ে ভাবে। স্বস্তিবোধ করবো নাকি অস্বস্তিতে পড়বো?
Normative beliefs বলতে এমন সব ধারনা বা বিশ্বাসের কথা বুঝায় যেগুলো ব্যক্তির চারপাশ ঘিরে থাকা ফ্যামিলি এবং ফ্রেন্ডসদের কাছে গুরুত্বপুর্ন বলে বিবেচিত। অন্যদিকে Motives to comply বলতে বুঝায় ব্যক্তি তার ফ্যামিলি এবং ফ্রেন্ডসদের মত করে বিশ্বাস বা ধারনাগুলোকে গুরুত্বপুর্ন বলে মনে করে? নাকি করে না?
উদাহরণস্বরূপ আমরা একটি সিচুয়েশনের কথা বলতে পারি যেখানে ব্যক্তির Attitude এবং Subjective norm ব্যক্তির যেকোন একটি খারাপ অভ্যাস ত্যাগের প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করতে পারে।
ব্যক্তি যখন মনে করে alcohol is fun, এলকোহল তাকে রিলাক্স করে, একটিভ সোশ্যাল লাইফ পেতে সাহায্য করে, তখন তার এলকোহল পরিত্যাগের Attitide এবং intention নিচে নেমে যায়। ফলাফল; এলকোহল পরিত্যাগের পুরো বিষয়টি তার জন্য নেগেটিভে নেমে আসে।
আবার এর বিপরীতে ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির সামাজিক চাপ, এলকোহলের কুফলতা ব্যক্তির সামনে তুলে ধরা, যেসব সিচুয়েশনে এলকোহল কঞ্জিউম করা হয় সেসব সিচুয়েশনে ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলার মাধ্যমে তার Attitude এ পরিবর্তন নিয়ে আসা সম্ভব।
Attitude এবং Subjective norm Intention তৈরিতে একসাথে কাজ করে, Intention আলটিমেটলি বিহেভিয়ারের দিকে লিড করে।
“ Exercising is healthy " একজন ব্যক্তির এমন Belief তার মাঝে এক্সারসাইজ করার Intention তৈরি করে।আবার কিছু কিছু ফ্যাক্টর এর মাঝে বাধা তৈরি করতে পারে। Intention এবং Behaviour এর মাঝে যদি টাইম গ্যাপ চলে আসে তবে Behaviour টি বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
একজন কর্মজীবী ব্যক্তি ভাবলেন যে কাজ শেষ করে সন্ধ্যায় কিছুটা সময় জিম করা যাক, কিন্তু কলিগদের সাথে আলাপ- আলোচনায়, আড্ডায় তিনি চলে গেলেন জিমের পরিবর্তে কোন এক কফি শপে।
Reasoned action থিউরি অনুযায়ী অভ্যাসের ক্ষেত্রে Attitude প্রভাবিত হয় Beliefs দ্বারা।
একজন ব্যক্তি যদি মনে করে Smooking is cool, তার বন্ধুরাও যদি একই মনোভাব পোষণ করে, তবে ব্যক্তির smooking এ অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।
2. ENGEL KOLLAT BLACKWELL MODEL
The Engel Kollat Blackwell (EKB) Model is a natural evolution of the ideas found in the theory of reasoned action. This theory of buyer behavior operates on a four-phase process that influences how consumers make purchasing decisions: input, processing information, decision stages, and variables in the decision-making process.
Engel Kollat Blackwell Model হচ্ছে বিজ্ঞানভিত্তিক একটি প্রক্রিয়া যা একজন কঞ্জিউমার কি কিনতে যাচ্ছেন তা অনুমান করতে সাহায্য করে। এই মডেলের ৩টি ক্যাটাগরি আছে; Present Situation - কাস্টমার বর্তমানে যেখানে অবস্থান করছে, Desired State - কাস্টমার লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে ভবিষ্যতে যেখানে যেতে চায়, Pathway for Movement from one state to another - ভিন্ন ভিন্ন ধাপে ভিন্ন ভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস যেগুলো তাকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারে
মডেলটির ৫টি স্টেজ রয়েছে সেগুলো হচ্ছে; information input, Information processing, Decision process stage, Decision process variables এবং External influence।
Information Input - ভোক্তা মার্কেটিং এবং নন-মার্কেটিং সোর্স থেকে বিভিন্ন ধরনের ইনফরমেশন পায় যেগুলো ডিসিশন মেকিং প্রক্রিয়ার প্রবলেম আইডেন্টিফিকেশন স্টেজকে প্রভাবিত করে। চাহিদানুযায়ী কিংবা পছন্দের কিছু খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া বিকল্প লেস স্যাটিসফ্যাক্টরি হলেও অনুসন্ধান চলতে থাকে। এই অনুসন্ধান হতে পারে প্রোডাক্টের প্রাইস বা ভ্যালু, ব্রান্ড, কোম্পানির আইডেন্টি সম্পর্কিত।
Information Processing - ভোক্তার এক্সপোজার, মনোযোগ, উপলব্ধি, গ্রহণযোগ্যতা এবং ইনকামিং ইনফরমেশন এর ধারণ নিয়ে কাজ করা হয়। ভোক্তা প্রথমে ইনফরমেশনের কাছে এক্সপোজড হয়, ইনফরমেশনকে গ্রহণ করার জন্য জায়গা করে দিতে হয়, ভোক্তার বিভিন্ন উদ্দীপক ইন্টারপ্রেট করতে হয়, এবং দীর্ঘ মেয়াদে ইনফরমেশন সংগ্রহ করে রাখার জন্য মেমরিতে ট্রান্সফার করতে হয়।
Decision Process stage - এখানে Problem recognition, Search, Search for alternatives, Alternate evaluation, Choice এবং Outcomes উপর ফোকাস করা হয়।
Problem recognition: সমস্যা সনাক্তকরণ প্রক্রিয়াকে কিভাবে জাগিয়ে তুলবে? মনোযোগ কিভাবে ট্রিগার করবে? কিভাবে সম্ভাব্য সমস্যা চিহ্নিত করবে যার সমাধান পারচেজের মধ্য দিয়ে হবে, একজন ভোক্তা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পুর্বে জানতে চাইতে পারে তার সমস্যার কতটুকু চিহ্নিত করতে পেরেছে?
Information Search: লোকজন সমস্যা চিহ্নিত করার পর খুঁজাখুঁজি শুরু করে দেয়, সে সমাধান খুঁজে। এই সমাধান খুঁজতে গিয়ে অনেক সিনারিও সামনে চলে আসতে পারে। সমাধান খুঁজায় কত সময় লাগতে পারে এটা নির্ভর করে যে ব্যক্তি সমাধান খুঁজছে তার কাছে সমস্যাটি কত গুরুত্বপুর্ন তার উপর।
Alternative Evaluation: বিকল্প সমাধান খুঁজাখুঁজির কাজ আগের ধাপেও করা হয়। এই স্টেজকে বলা হয় ডিসিশন মেকিং এর inter - relational স্টেজ। মানে বিষয়টি হচ্ছে Evaluation এর এই পর্যায় নতুন নতুন অনেক সম্ভাবনার উদ্ভব হতে পারে যেগুলো আগে কখনো আবিষ্কার করা হয় নি। বাড়তি তথ্য সংগ্রহ এবং বিভিন্ন বিকল্প মূল্যায়নের একমাত্র সুযোগটি এখানে পাওয়া যায়।
Choice: ইতোমধ্যে হাতে ৪-৫টি সমাধান থাকা উচিত। ফাইনাল চয়েজটি হতে পারে ব্যক্তির ভ্যালুর বিপরীতে যাবে অথবা ব্যক্তি ফিল করবে যে এটাই অবভিয়াস সলিউশন। এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার উপায়টি হতে পারে উপদেষ্টার কাছ থেকে পরামর্শ নেয়ার মাধ্যমে / রিসার্চ করে স্টাডি করার মাধ্যমে / " ব্লাইড টেস্ট " টেস্ট করার মাধ্যমে।
Post Purchase Decision: ব্যক্তি প্রোডাক্ট / সার্ভিস কঞ্জিউম করার পর ব্যক্তির হবে অভিজ্ঞতা। ব্যক্তি হয়ত আবার কিনবে অথবা কিনবে না এবং নেক্সট পারচেজের দিকে মুভ করবে। ব্যাপারটি যাই হোক না কেন বিচার করে দেখে এত টাকা / দাম দিয়ে যে কিনলাম কেনাটা কি যথোপযুক্ত হয়েছে কিনা? সামনে আবার কেনাটা ঠিক হবে কিনা?
Decision Process Variables - ব্যক্তির ডিসিশন মেকিং প্রসেসের প্রতি ধাপে অপিনিয়ন এবং চয়েজ ডিফারেন্স তৈরি করে। সংস্কৃতি, মানসিক অবস্থা এবং পরিবেশগত প্রভাব ব্যক্তির ডিসিশন মেকিং প্রসেসকে প্রচণ্ডভাবে প্রভাবিত করে। কিছু কিছু ফ্যাক্টর আছে যেগুলো শুধুমাত্র চিন্তা ভাবনা দিয়েই বদলে দেয়া যায়- এই ফ্যাক্টরগুলো ইন্ডিভিজুয়াল কঞ্জিউমারের জন্য ভ্যালু তৈরিতে সাহায্য করে। ফ্যাক্টরগুলোর মাঝে রয়েছে attitude, learning style, curvilinear models of decision making এবং dual process model।
External Influences - এর অংশ হচ্ছে Circle of Social Influence; যেখানে থাকে কালচার, সাব-কালচার, সোশ্যাল ক্লাস এবং ফ্যামিলি। সামজিক চ্যালেঞ্জগুলো কঞ্জিউমারের বায়িং ডিসিশন মেকিং প্রসেসকে প্রভাবিত করে। যেমন একজন কঞ্জিউমার তার পরিবারের কারো কাছ থেকে এলকোহলিক বেভারেজ কিনতে একটু অস্বস্তি বোধ করে।
3. MOTIVATION-NEED THEORY
১৯৪৩ সালে সাইকোলজিক্যাল কমিউনিটি মাসলোর “ Hierarchy of need “ থিউরি গুরুত্ব অনুধাবন করে। এই থিউরিতে মাসলো বলেন যে, মানুষ কাজ করে সন্তুষ্টি অর্জন এবং ৫টি বেসিক প্রয়োজন পূরণ করার জন্য, সেগুলো হচ্ছে জৈবিক চাহিদা, নিরাপত্তার চাহিদা, সামাজিক চাহিদা, সন্মানের চাহিদা এবং আত্বোপলোব্ধির চাহিদা।
বিজনেস এবং মার্কেটিং ক্লাসে বিক্রয়ে সাফল্যের জন্য কঞ্জিউমার উপযোগী ম্যাসেজ কেন প্রয়োজন এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য মাসলোর থিউরি ব্যবহার করা হতো। কঞ্জিউমারের প্রয়োজনের লেভেল অনুযায়ী তার মাঝে আবেদন তৈরি করার জন্য পারচেজকে গুরুত্ব দেয়া হয়। তার সামনে তাৎপর্যময় ম্যাসেজ উপস্থাপন করে তার মাঝে তাড়না বোধ জাগ্রত করা হয়।
কৃত্রিম একটি প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে কার্যকরী ক্যাম্পেইন এবং এড তৈরি করা যায়, এর জন্য প্রয়োজন হবে মার্কেটিং ক্যাম্পেইনে motivation-need behaviour থিউরির একটি শক্ত অবস্থান। এই ধরনের ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভোক্তাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
একটি সাধারণ আধুনিক উদাহরণ হিসাবে আমরা লাক্সারিয়াস গাড়ি নির্মাতাদের কথা বলতে পারি। তারা নান্দনিকতার চেয়ে নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা বৈশিষ্ট্যগুলোর দিকে জোর দেয়। তারা ভোক্তার মাঝে এমন এক উপলব্ধির সৃষ্টি করে যেন মনে হয়; ভোক্তা তার এবং তার পরিবারের শারীরবৃত্তীয় সুরক্ষা প্রদানের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার জন্য সে বিলাসবহুল গাড়ীতে অর্থ ব্যয় করছে।
4. HAWKINS STERN IMPULSE BUYING
বেশিরভাগ কঞ্জিউমার বিহেভিয়ার থিউরি ভোক্তার যৌক্তিক আচরণকে ফোকাস করা সেখানে Hawkins Stern তার বিহেভিয়ার থিউরিতে আবেগীয় আচরণের দিকে ফোকাস করেছেন। কেননা তিনি মনে করেন যত কেনাকাটা হয় তার অর্ধেক কেনাকাটার পেছনে আবেগীয় আচরণ কাজ করে।
এক্সটারনাল বিভিন্ন ফ্যাক্টর ভোক্তার মাঝে আবেগীয় উদ্দীপনার সৃষ্টি করে, যারফলে যৌক্তিক চিন্তা ভাবনার বাইরে অনেক কেনাকাটা সম্পাদিত হয়। । থিউরিতে আর্গুমেন্ট উপস্থাপন করা হয়েছে যে, মার্কেটাররা ভোক্তাকে বেশী করে ইমপ্লালসিভ কেনাকাটায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে। আমেরিকায় পরিচালিত সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ৮০% ভোক্তা ইমপ্লাসিভ কেনাকাটা করে ( Jhonson, 2018 ) ।
এই থিউরিতে ৪ ধরনের ইমপ্লাসিভ বায়িং এর কথা বলা হয়েছে।
Pure Impulse Buying: সম্পূর্ণভাবে ইমপ্লাস বায়িং; ডেইলি শপিং রুটিনে নেই, শপিং লিস্টে নেই কিন্তু ফাইনালি কিনে ফেলা। অনেকে একে “escape purchase” বলে। এই ধরনের শপিং নরমাল পারচেজ প্যাটার্ন ভেঙ্গে ফেলে এবং এখানে ভিজুয়াল একটি গুরুত্বপূর্ন পার্ট প্লে করে। নভেলটি প্রোডাক্ট এর বায়ারের মাঝে অ্যাাপিল তৈরি করে। সাধারণত প্রোডাক্টগুলো বায়ারের কাছে নতুন এবং ভিজুয়ালি অ্যাপিলিং হয়। যার জন্য বায়ার ওভার স্পেন্ড করে ফেলে। অন্যদিকে মার্কেটার হাই রেভিনিউ উঠিয়ে নেয়।
নতুন একটা ড্রেস কিংবা বাচ্চার খেলনা শুধুমাত্র ইউনিক ডিজাইনের কারণে অনেকে কিনে ফেলে। তাদেরকে ইউনিক ডিজাইন আকৃষ্ট করে।
Reminder Impulse Buying: পণ্যের ব্যাপারে পুর্বের অভিজ্ঞতা বা নলেজ আছে কিন্তু এখন কেনার কোন ইচ্ছা নেই। এই ধরনের বায়িং ফ্যাশন মার্চেন্ডাইজ বায়ারকে হাইলি অ্যাপিল করে। এই ধরনের প্রোডাক্ট প্রাইমারি শপিং আইটেম ক্যাটাগরির বাইরে পড়ে যেমনঃ নেইল পালিশ বা কানের দুল।
শপিং লিস্টে না থাকার পরও সিরিয়াল বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিনে ফেলা শুধুমাত্র প্রমোশনাল অফারের কারণে।
Suggested Impulse Buying: Stern বলেন suggestd impulse buying তখন হয় যখন সচরাচর দেখা যায় না এমন প্রোডাক্ট কাস্টমার যখন প্রথম বারের মত দেখে এবং তার মাঝে কেনার একটা আগ্রহ তৈরি হয়।
একজন নিয়মিত বেবি প্রোডাক্ট ক্রেতা যিনি বেবি বোতল ক্লিন করার জন্য রেগুলার ডিটারজেনট ব্যবহার করেন, উনাকে হঠাৎ করে বেবি বোটল ক্লিনিং লিকুইড সাজেস্ট করা হলে কিনতে আগ্রহী হতে পারেন। Brick-and-mortar এ এই ধরনের সেলসের সাফল্য নির্ভর করে সেলস পার্সনের প্রচেষ্টার উপর।
Planned Impulse Buying: এই ধরনের ইমপ্লাস বায়িং তখন হয় যখন কাস্টমারের একটি প্রোডাক্টের প্রয়োজনীয়তা আছে কিন্তু তার স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে সে নিশ্চিত না। Stern বলেন লোয়ার প্রাইস অথবা অন্যান্য সেলস প্রমোশন টেকনিক এই ধরনের বায়িং এর দিকে নিয়ে যায়। গ্রোসারি আইটেমে একটা কিনলে একটা ফ্রি অফারের কারণে অনেকেই তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত আইটেম কিনে ফেলে। বিষয়টা হচ্ছে প্রয়োজন আছে কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিনে ফেলা।
5. THEORY OF BUYER BEHAVIOR
বায়িং বিহেভিয়ার কমবেশি পুনরাবৃত্তিমূলক। বায়ার বিভিন্ন প্রোডাক্টের জন্য পারচেজ সাইকেল তৈরি করে, এই সাইকেল থেকে বুঝা যায় সে কখন কোন পণ্য কিনবে। ডিউরাবেল এপ্লাইয়েন্স এর সাইকেল অনেক লম্বা, কদাচিৎ এই ধরনের প্রোডাক্ট কেনা হয়। ফুড এবং পার্সোনাল কেয়ার প্রোডক্টের সাইকেল ছোট, নিয়মিত এমন প্রোডাক্ট কেনা হয়। যাতে করে বারবার ব্রান্ড পছন্দের ঝামেলা পোহাতে না হয় তার জন্য বায়ার প্রাসঙ্গিক তথ্যগুলো সংগ্রহ করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রকিয়ার জন্য একটি রুটিন তৈরি করে।
যার ফলে থিউরিগুলোক আবশ্যিকভাবে বায়ারের কমার্শিয়াল এবং সোশ্যাল এনভায়ারমেন্ট থেকে তথ্যের সংযোজন, ডিসিশন এলিমেন্টস এর কম্বিনেশন কিভাবে অনুসন্ধান প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে, পুনরাবৃত্তিক স্বভাবের কারণে সময়ের পরিক্রমায় তাদের মাঝে যে পরিবর্তনগুলো আসে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা, সিদ্ধান গ্রহণ প্রক্রিয়ার উপাদানগুলো চিহ্নিত করতে হয়।
বায়ারের ব্রান্ড চয়েজ ডিসিশনের উপাদানগুলো হচ্ছে ১) এক গুচ্ছ মোটিভ, ২) বিভিন্ন বিকল্প, এবং ৩) ডিসিশন মেডিয়েটরস যার দ্বারা মোটিভগুলো বিকল্পের সাথে ম্যাচ করে। মোটিভ একটি প্রোডাক্ট ক্লাসের প্রতি নির্দিষ্ট করা এবং অন্তর্নিহিত প্রয়োজনকে প্রতিফলিত করে। বিকল্প হচ্ছে; ভিন্ন ভিন্ন ব্রান্ড যাদের প্রয়োজন মেটানোর ক্ষমতা আছে।
ব্রান্ড অল্টারনেটিভ এর সংজ্ঞায় ৩টি নোশন আছে। প্রয়োজন পূরণের জন্য বিকল্প হিসাবে চয়েজ করা বিভিন্ন ব্রান্ড একই প্রোডাক্ট ক্লাসের হতে হবে এওন কোন কথা নেই। একজন বায়ার বেভারেজ কঞ্জামশনের জন্য বিকল্প হিসাবে চা, ওভাল্টিন এবং কফি চয়েজ করতে পারে। আবার শুধুমাত্র ২টি বিকল্প চয়েজ করতে পারেন যেগুলো হতে পারে কফি এবং বিয়ার। এখানে কফি এবং বিয়ার ২টি ভিন্ন প্রোডাক্ট ক্লাসের পণ্য।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে; বায়ারের চয়েজ ডিসিশন থেকে বিকল্প ব্রান্ডের সংখ্যা পরিমাণে কম হয়, এটাকে সামগ্রিকভাবে “ evoked set “ বলা হয়। ব্রান্ডের যতটুকু সম্পর্কে জানে তার পরিমাণটাই হচ্ছে “ evoked set “ তবে এর বাইরে মার্কেটে আরও অনেক ব্রান্ড থেকে যায়।
“ evoked set “ এ ২জন ভিন্ন ভিন্ন বায়ারের ভিন্ন ভিন্ন অল্টারনেটিভ থাকতে পারে।
বায়ার মোটিভ অর্ডার এবং স্ট্রাকচারের কাজ করে ডিসিশন মেডিয়েটর। মোটিভ পূরণ করার সক্ষমতার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ব্রান্ডকে অর্ডার এবং স্ট্রাকচার করা হয়। বায়িং সিচুয়েশন সম্পর্কে শিক্ষার মধ্য দিয়ে ডিসিশন মেডিয়েটর গড়ে উঠে।
যখন বায়ার একটি পণ্য কেনা শুরু করে তখন তার পণ্যটি সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা থাকে না। অভিজ্ঞতা গড়ে তুলার জন্য সে কমার্শিয়াল এবং সোশ্যাল এনভায়ারমেন্ট থেকে ইনফরমেশন খুঁজা শুরু করে। তার এই ইনফরমেশন শুধুমাত্র গ্রহণ করার মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না, কাঠামোর রেফারেন্সের সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করে।
সোর্স যাই হোক, বায়ার ডিসিশন মেডিয়েটর ডেভেলপ করে যাতে করে সে তার প্রয়োজন মেটানোর জন্য বেস্ট ব্রান্ডকে খুঁজে নিতে পারে। কোন ব্রান্ড যদি স্যাটিস্ফ্যাক্টরি বলে প্রমাণিত হয় তবে বায়ারের মোটিভ স্যাটিস্ফাই করতে পারবে, এবং এর সাথে ঐ ব্রান্ড বারবার কেনার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
বায়ার এক বা একের অধিক ব্রান্ড সন্তুষ্টিসহকারে বারবার কেনার মধ্য দিয়ে ডিসিশন প্রসেসের একটি রুটিন তৈরি করে ফেলে। সেখানে কেনাকাটার প্রক্রিয়াগুলো এমন সুগঠিতভাবে সাজানো থাকে যে একটি ইভেন্টও পুরো প্রক্রিয়াকে ট্রিগার করতে পারে।
লিখেছেন
শামিম বদরুল আলম
COMMENTS